Wednesday, August 17, 2011

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৩১

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৩১


সুচনাহীন এক সমাপ্তি,
কিংবা সমাপ্তিহীন সূচনা,
জীবনের জীর্ণ পুজোয়,
আমি-তুমি ঠিক তাই,
বিপরীতার্থক কোন প্রতিশব্দ,
অথবা প্রতিশাব্দিক বৈপরিত্ব,
নিয়তির নীতিহীন খেলাঘরে,
আমি-তুমি ঠিক তাই,
শব্দহীন কিছু শুন্যতা,
এবং শুন্যতাহীন শব্দ,
বাস্তবতার বিবর্ণ রঙ্গমঞ্চে,
আমি-তুমি ঠিক তাই,
তবু বর্ণচোরা স্বার্থ,
নিঃস্বার্থে সাজায় জলসাঘর,
আমি-তুমি সেথায় শুধু,
সুবাসিত কাগুজে ফুলমাত্র...

অভিমানভোলানি ভালবাসার দুজন...

অভিমানভোলানি ভালবাসার দুজন...

ভেঙ্গে যাই তোমার শাসন,
হাজার বারণের রক্তচক্ষু,
এই করনা সেই করনা,
এমন অন্যায্য আব্দারের জাল,
ছিড়ে ফেলি,ছুড়ে ফেলি সব,
আজ আর অগ্নিগর্ভ অভিমান,
ক্ষুব্ধ স্ফুলিঙ্গের তোয়াক্কা করিনা,
আজ চাপা অভিমানের মেঘে,
ক্ষোভের টিপটিপ একঘেয়ে বৃষ্টিতে,
আমি তোমায় ভিজিয়ে দেব,
তোমার মনের কুন্ঠিত আকাশে,
রংধনু একে দেব আজ,
তুমি ভুলে গিয়েছিলে এতদিন,
ভালবাসা মানে তোমার আচলে,
শক্ত গিটে আটোসাট আমি নই,
বরং সহনশীল সহযোগিতার ডানায়,
সংবেদনশীল স্বাধীন আকাশ মেলে,
সহমর্মী দুই সহচর পাখির,
সপ্নের সন্ধান ই ভালবাসা,
অতএব বেধে দিওনা তেপান্তর,
চার দেবালের নীরব চৌকাঠে,
ভালোবেসে চল ভেসে যাই,
দুজনে দুনির্বার দিগন্তরেখায়....

Tuesday, August 16, 2011

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৩০

 মুখবইয়ের টুকরো কথন-৩০

তবু বেচে থাকা,
এই মৃতের শহরে,
শ্মশানের স্তব্ধতায় ,
কিছু পাওয়ার জন্যে নয়,
শুধু বিলিয়ে যাই,
প্রতিবার প্রতিক্ষণ,
সবকিছুর পরে,
এখন বিলাই নিজেকে,
একটু একটু করে,
অস্তিত্বহীনতায় ভুগে ভুগে,
ক্ষয়িষ্ণু পাথুরে পথে,
সময়ের চাহিদায়,
বাস্তবতার প্রয়োজনে,
নিয়তির লীলাঘরে,
মুমুর্ষ বায়ু পুরে,
তবু বেচে থাকা...

অভিমানী অভিপ্রায়ে অফুরন্ত অপেক্ষা...

অভিমানী অভিপ্রায়ে অফুরন্ত অপেক্ষা...
আচ্ছা অভিমানের আয়ু কত?
অনেককেই জিগ্গেস করেছিলাম,
কিন্তু কেউই বলতে পারেনি,
সবাই কেন যেন এড়িয়ে গিয়েছে,
কোনো উত্তর পাইনি আমি আজও,
আর তাই তোমাকেই শুধাই,
বলতে পারো কি তুমি?
অভিমানের পথ কতটা দীর্ঘ?

রাতের পর রাত কেটেছে,

বালিশে মাথা রেখে আমি,
মেঘ গুনেছি খোলা জানালায়,
হাজার হাজার মেঘের খন্ডে,
বুনে দিয়েছি দীর্ঘশ্বাস আমার,
বৃষ্টির ফোটায় ফোটায় ওরা,
অসীমের দিগন্তে হারিয়েছে বারবার,
আচ্ছা অভিমান কি মেঘের শরীর?

এক অভিমানীর চাপা অভিমানে,

আমার বুকপকেটে গুমরে কাদে,
একশ একটি মলিন গোলাপ,
আমার কবিতার খাতা জুড়ে,
একশ একটি কবিতার হা-হুতাশ,
আমার বাগানে ভোরের আলোয়,
একশ একটি শিশিরের বিলাসিতা,
অভিমানী অভিপ্রায়ে অফুরন্ত অপেক্ষা..
.

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২৯

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২৯
 
আর কখনই তুমি ফিরবেনা,
জানি আমি খুব ভালোভাবেই,
উত্তাপ ফুরিয়ে গেলে যেমন,
শীতার্ত মানুষেরা পিঠ দেখায়,
তেমনি করেই তুমিও আজ,
যাচ্ছে নতুন উষ্ণতার খোজে,
এখানে কৃষ্ণকায় ছাইয়ের সতুপে,
আমি আধপোড়া টুকরো কাগজ,
অজস্র শব্দের ধোয়াটে হাহাকার,
যাদের অব্যেক্ত গভীরতা ছুয়ে,
একটি নিদারুন শুন্যতার কান্না,
আর কখনই তুমি ফিরবেনা......

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২৮

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২৮
 
আজ ও জোছনা আমার ঘরে কাঁদে,
তোমার হারিয়ে যাওয়ার রাত্রি,
এখনো আমায় পিছু ডেকে নেয়,
এখনো বলা না বলার বেদনায়,
আমি নির্ঘুম আঁধার গুনে যাই,
তোমার স্মৃতির দু-একটা ছেড়া পালক,
এখনো বাতাসে ভেসে বেড়ায়,
আর আমি ভুল-নির্ভুলের হিসেব খুলে,
আজ জোছনা আমার ঘরে কাঁদে,
তুমিহীনা নির্বাক আমার পানে চেয়ে....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২৭

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২৭
 
আমায় তুমি রৌদ্র কর,
চোখের নোনা ভাঁজে,
বৃষ্টি কর যখন তখন,
খোপার কারুকাজে,
মেঘলা হব কালচে কাজল,
অভিমানের ঝাঝে,
কাকন বালার রিনিঝিনি,
সকাল-দুপুর-সাঝে,
আলতারাঙ্গা জলের ডাঙা,
ভাঙ্গবো নুপুর পায়,
নীলচে আকাশ জড়িয়ে নেব,
তোমার সারা গায়,
রামধনুটার রুমোল কর,
থাকব বেদনায়,
আমায় তুমি তোমার কর,
জীবন সাধনায়....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২৬

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২৬
 
চোখ ফেরাতেই ভোর পেরুলো,
রাত জুড়্রেছে ফের,
কথায় খেলায় ঘড়ির কাঁটা,
পথ হেটেছে ঢের,
সময় কেন এমন করে,
করছে প্রবঞ্চনা,
ছুটির দিনের আমেজ গায়েই,
বাস্ততার আনাগোনা,
কেমন করে থামাই ওদের,
ঘুম যে আদৌ চোখে,
স্বপ্ন আমার হয়না বোনা,
সময় চুরির শোকে,
সময় আমার হচ্ছে চুরি,
সদাই নিরন্তর,
বুকপাজরে গুমড়ে কাঁদে,
ছোট্ট এ অন্তর.......

Monday, August 15, 2011

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২৫

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২৫
 
ঘুরে ফিরে আবার সেই তো অন্ধকার,
সেই তো রাতের জোছনার হাহাকার,
বৃষ্টির জলে পুড়ল নীরবে বুক,
ভেজা কান্নায় চাতক চোখের সুখ,
তুমি কি জানো চাপা দুখের ঘ্রাণ,
ফুসফুসজুড়ে ছড়ালো বিষের বান,
হাতের মুঠোয় শুন্যতার অট্রহাসি,
বেহিসেবী অতীত তবুওতো ভালবাসি,
তবু তোমার জন্যে থেকে থেকে বারবার,
ঘুরে ফিরে আসে সেই সে অন্ধকার.....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২৪

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২৪
 
জীবনের কৃষ্ণকায় কোলাহলে,
গুমোট অভিমানের কান্নায়,
চাপা ক্ষোভের অভিলাষে,
ক্ষত-বিক্ষত হই প্রতিক্ষণে,
এভাবেই কেন পরাজিত হই?
চোখ বন্ধ করে নীরবে,
কেন হেঁটে যাই পায় পায়?
সময়ের স্রোতে ভাঙ্গি নিয়ত,
অতল গহ্বরের হাতছানিতে,
হতাশার চিতায় লেলিহান শিখায়,
এভাবেই কেন সপে দেওয়া,
নিজেকে পূজার অর্ঘ্য করে?
ওই দেবতার আসনটাতে,
আমিও তো অসীন ছিলেম,
আজ কেন পূজারীর বেশে,
এভাবেই নতমুখ আত্মসমর্পণ?...

কবিগুরুর স্মরনে খুদে শ্রদ্ধাঞ্জলি....

কবিগুরুর স্মরনে খুদে শ্রদ্ধাঞ্জলি....

আচ্ছা ভেবে দেখোতো একবার,
যদি ওই ধ্রুবতারাটি খসে পড়ে,
কিংবা খসে পড়ে জোছনাদায়ি,
কতটা নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ে রাত,
কতটা বিমর্ষতায় কেদে উঠে,
শিল্পীর হাতে সহস্র রংতুলি!

একবার ভেবে বলত তুমি,
যদি ওই সূর্যটা চুরি হয়ে যায়,
কিংবা চুরি হয় নীলচে আকাশ,
কতটা শুন্যতায় ভরে ওঠে সকাল,
কতটা বিষন্নতায় দিকভ্রান্ত হয়,
উপবৃত্তাকার কক্ষপথের অজস্র প্রাণ!

তোমার ফেলে যাওয়া পথের প্রান্তে,
আমরা সেই উদ্ভ্রান্ত পথিকের দল,
আগলে রাখি তোমার সে পদছাপ,
পরম শ্রদ্ধায় শোকাতুর হৃদয়জুড়ে....!

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২৩

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২৩
 
হারিয়ে গেছে জোছনা আমার,
পিচঢালা পথ বেয়ে,
এখন শুধু ঝাপসা চোখে,
থাকি তাতে চেয়ে,
প্রানের পরম কাছের স্বজন,
আছিস যত দুরে,
স্মৃতির মেঘে রোদের আচল,
থাকবি হৃদয় জুড়ে,
নাম দিয়েছি বন্ধু তাদের,
বন্ধু দিবানিশি,
দুরত্ব সব ঘুচিয়ে দিয়ে,
থাকিস পাশাপাশি.....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২২

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২২
 
চুপিসারে রাত ডুবে যায়,
মেঘ জেনে যায় সব,
তোমায় নিয়ে কল্পনাতে আমার,
সাদাকালো হাজার ছবির গল্প,
খাতার ভাঁজে কালির সাজে,
জমাট কথার শান্ত সাগর,
বৃষ্টি তাদের জলের খামে ভরে,
ছুড়ে দিল তোমার জানালাতে,
ভোরের আলোয় ঘুমভাঙ্গা চোখে,
তুমি কি তাদের বুঝতে পারো?
চিনতে কি পারো স্বপ্ন শোকে,
হাজার সুতোর নকশী বুনন?
ভালবাসার আকাশ ছেড়ে কেন,
লুকোও তুমি ইট-পাথরের কোলে,
রাত্রি আমার শুন্যতাতে কাঁদে,
তোমার চুলের গন্ধ পাবে বলে......

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২১

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২১
 
চললাম তবে ফের,
যদি ইচ্ছে করে,
পথ আগলে দাড়িয়,
যদি মন কাদে,
বুকে জড়িয়ে রেখো,
যদি দুঃখ জাগে,
বেধে নিও তবে,
জানি সবটাই ভুল,
শুরু থেকে শেষ,
বাস্তব এবং কল্পনা,
অতীত থেকে বর্তমান,
সর্বত্রই ভুলের ছড়াছড়ি,
তাই চললাম ফের,
চুকিয়ে সকল দেনা,
বিকিয়ে যত আশা,
মাখামাখি আলো আঁধারে,
যদি বুঝতে পারো,
তবে আটকে রেখো,
ভালবাসার বিনিসুতোর বাধনে,
চললাম তবে ফের.....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২০

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২০
 
ভুলের দরজায় খিড়কি এটে,
হেটে চলি অজানার পানে,
শুদ্ধতার বিশুদ্ধ অমৃতের খোঁজে,
যদিও জীবনের অলিতে গলিতে,
এখন চরে নিষিদ্ধ রাত্রি,
তবু আয়নার স্বচ্ছ বিম্বে,
কিসের যেন হাতছানি দেখে,
মেনে নিয়েছি মনের মিনতি,
ওই ধ্রুবতারাকে সত্য জেনে,
তুচ্ছ করি সকল মায়া,
এখন চোখে সোনালী বিকেল,
হলদে আলোয় বর্তমান হাসে,
আর আমি সবকিছু ভুলে,
ভুলের দরজায় খিড়কি এটে,
চলেছি শুদ্ধ হব বলে,
শুদ্ধ মানুষ হবার পণে....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১৯

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১৯
 
দেখি নিন্দুকেরা কানাঘুষা করছে পরস্পরে,
ভালবাসা ভালো নেইকো ভালবাসার ঘরে,
ঘড়ির কাঁটা হাসতে দেখে মুখটি গোমড়া করে,
বলি সবটাই হেসনাকো,রেখো কিছু ধরে,
হয়ত ভোরের ঘুম ভাঙ্গেনি ডাকেনি তাই পাখি,
মিশমিশে এ রাতের কিন্তু নেয়তো বেশি বাকি,
সবুজ আলোয় শিশির হেসে পড়বে যখন ঝরে,
নিন্দে কাঁটায় নুনের ছিটায় সইবে কেমন করে?...

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১৮

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১৮
 
আমি বহু দুখের রংধনুতে,
এখন মুছে নিয়েছি চোখ,
তোমার শাড়ির কোমল আঁচল,
কোনো প্রয়োজন নেই আর,
তোমার চোখের কাজল কালোয়,
বৃষ্টি এখন ভয় পাইনে আর,
বুকের সাগর উগরে দিয়েছি,
জলের ধারায় ভিজেছে সময়,
আমার দেয়াল ঘড়ির পেন্ডুলামে,
মরচে ধরেছে নোনা স্রোতে,
এখন আর এই জীবনে,
প্রয়োজন নেই কোনো তোমার,
নেই প্রয়োজন ভালবাসার আর.....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১৭

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১৭
 
আজ তোমায় দেখে,
ওদের কেউ কেউ,
সুন্দর খুঁজে বেড়ায়,
দেহের ভাঁজে ভাঁজে,
লোলুপ দৃষ্টির উত্তাপে,
ওরা পুড়ে ছাই হয়ে যায়,
তবু তোমাকে ঘিরে রেখে,
অশ্লীল শব্দের স্রোতে স্রোতে,
ভালবাসার বীজ বুনে,
শরীরের অলিতে গলিতে,
যেন দেহ-সর্বস্স উষ্ণতায়,
লুকায়িত সমস্ত সুন্দর.

আর অনাধুনিক আমি,
তোমায় ছেড়ে দেই,
অনাবিল সবুজের কোলে,
প্রজাপতির ডানা ছুয়ে,
বর্ষায় ভেজা কদমে,
কলকল নদীর মতন,
ছপছপ নীল আকাশে,
তুমি চঞ্চল ঘাসফড়িং,
পৃথিবীর সমস্ত সুন্দর,
তুমি তোমার করে নিলে,
আমার তুমি প্রকৃতির মত,
নির্মল সুন্দরের প্রতিবিম্ব.

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১৬

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১৬
 
তুমি চলে যাওয়ার পর,
কতকিছু যে ঘটলো,
কোনটা রেখে কোনটা বলি,
মজার কথা কি জানো,
এরই মাঝে মানুষগুলো সব,
অস্থিরতায় ভুগতে শুরু করেছে,
সত্য-মিথ্যের বালাই নেই,
ভালো-মন্দের চিরাচরিত সজ্ঞা,
বদলে যেতে শুরু করেছে,
মানুষগুলো সব বদলে যাচ্ছে,
জানো মাঝে মাঝে কি ভাবি?
তুমিও কি ওদের মতই বদলে যেতে?
যাহ,তা কখনই হবার নয়,
তুমি কিভাবে বদলে যাবে বল,
তুমিতো আমার জীবন ধ্রুবক,
তুমি কি বদলাতে পারতে?....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১৫

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১৫
 
আজ সারাদিন বৃষ্টি হলো,
শহরটার চেহারাই বদলে গেল,
মনে হচ্ছিল জলা-ডোবা যেন,
খিটখিটে মেজাজে বসেই ছিলেম,
কিচ্ছু করার ছিলনা আমার,
তবে তুমি বললে বেরুতাম,
ঘুর্নিঝড়ের তোয়াক্কাও করতামনা,
কিন্তু তোমার অভিমানগুলো,
ওই কালো মেঘের মতন গাঢ,
অঝোর শ্রাবনেও যেন ক্লান্তিহীন,
আর আমি যেন এই শহরের অলি-গলি,
একাকার তবু নীরব চাহনি,
খুঁজে যাই হঠাত জাগা রংধনু ,
মেঘ্ভেদ করে উকি দেওব সুর্যের মতন,
মুঠোফোনের ওপাশে তোমার হাসির ঝিলিক,
অভিমান কেটে ভালবাসার খানিক উচ্ছাস...

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১৪

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১৪
 
নামের মানুষ ঢের দেখেছি প্রানের মানুষ চাই,
মনে-প্রাণে মানুষ এমন মানুষ কোথায় পাই?
অমানুষের মুখোশ মিছিল স্রোতের টানে যাই,
মানুষ হয়েও ওই অমানুষে নিজেরে লুকাই,
আছে কি কেউ সাহসভরে ভাঙ্গবে দেয়ালটাই,
আধার ঘরে জালবে আলো কাঠির দিয়াশলাই,
আমি মানুষ খুজি মানুষ এমন দাওনা এনে ভাই,
মনে-প্রাণে মানুষ এমন মানুষ কোথায় পাই?....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১৩

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১৩
 
তোমার কোলে দুঃখ ভুলে,
গল্প বোনার রাত,
শুন্যতাদের দূরে ঠেলে,
ধরছি তোমার হাত,
খোলা চুলের কালো মেঘে,
হাওয়ার উদম নাচ,
তোমার মুখের হাসির আভায়,
জোছনার মৃদু আঁচ,
তোমার পানে চেয়ে চেয়ে,
স্বপ্ন সাজা ফের,
বলব কত বলেছিতো,
ভালো লাগে ঢের......

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১২

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১২
 
কি এমন হলো হঠাত করে,
এভাবে ঝড়ের বেগে বেরিয়ে গেলে,
তোমার কপালের নীল টিপটি,
অভিমানে নীল হয়ে খসে পড়লো,
আকাশের কোনো দূর নক্ষত্র ও,
বোধ করি এভাবে খসে পড়েনি,
হাতের রং-বেরঙের বেলোয়ারি চুড়ি,
মুহুর্তেই ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হলো,
বৃষ্টির জল ও বোধহয় কখনো,
এত টুকরো হয়ে ঝরেনি,
চোখ তার ভোরের সুর্য যেন,
লালচে আভায় লজ্জা পেত সেও,
শীতের ঘন কুয়াশারাও কখনো,
এত ঝাপসা করতে পারেনি তাকে,
কি এমন হলো হঠাত করে,
কেন ওভাবে সেদিন চলে গেলে তুমি,
ভালবাসার অপার সুর্যাস্ত পানে.....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১১

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১১
 
কিছু অভিমানের শেষ নেই,
আমার চোখ সেটা জানে,
আমার মুখ সেটা বোঝে,
আমার ভাবনা সেটা ভাবে,
তবু যখন সবকিছু মিলিয়ে,
আমি মানুষ হিসেবে দাড়াই,
তখন কি এক কৃষ্ণ আচ্ছাদনে
আমার বিবেক অন্ধ হয়ে পড়ে,
আমি মনুষত্বের সীমানা পেরিয়ে,
কোনো এক প্রষেলিকায় ডুব দেই,
কোনো এক শকুনী ডানায়,
আমি ভর করে উড়ে যাই,
আমি পথহীন পথিকের বেশে,
হয়ে পড়ি পৈশাচিক উন্মাদনা,
আর তখন হাজারটা অভিমানী মুখ
নীল হয়ে যায় বেদনায়,
হাজার ভয়ার্ত চোখের আঙ্গিনায়
প্রবল জলোচ্ছাসের নোনা উত্তাপে,
জীবন হয়ে পড়ে অর্থহীন,
আমি এই কুলীন সমাজের,
বর্বর বেদুইন বিবেকবোধ.

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১০

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১০
 
ধোয়াটে স্বপ্নের ধুসর সীমান্তে,
তুমি এসেছ বসন্ত আমার,
নব সবুজের বাহারি আবেশে,
ঢেউ জেগেছে বিমর্ষ অরন্যে,
কি এক উদাসী কুহুতানে,
হৃদয় আজ পূর্ণতার পরাভ্রিত,
কথাদের ডাল থেকে ডালে,
বুনে চলেছে প্রানের পরশ,
তোমাকে বলিনি কখনো আর,
হে মোর জীবনের বসন্তরানী,
তোমার হাসির বর্ণিল প্রজাপতি,
ঘুচে দিয়েছে শুন্যতা মোর,
আজ আমি শীতের মর্মর ভেঙ্গে,
শুনি ভালবাসার ফুলেল সংগীত,
শুধুই তোমারি জন্যে....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৯

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৯
 
একটা সময় ছিল যখন,
তোমার কাছে যাওয়ার জন্যে,
তোমাকে আরও পাশে পেতে,
আমি মুখিয়ে ছিলেম শুধু,
কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম,
যতখানি নৈকট্যের অভিপ্রায় ছিল,
ততখানি দুরত্বে সরে গেছি,
বহু চেয়ে ও আমি পারিনি,
সেই দুরত্ব নামক নদীর,
দু-কূল এক করে দিতে তখন,
আজ যখন শুন্যতার ভাগ নিয়ে,
আমি দূরত্বের সাগর গড়তে চাই,
চেয়ে দেখি তুমি পাশে দাড়াও,
জীবনের অন্ধত্বে ভাগ বসাতে চাও,
কিন্তু বিশ্বাস কর প্রিয়তমা,
আজ আর তোমাকে চাইনে,
আজ অন্ধকারে বাচতে শিখেছি,
নিষ্প্রয়োজন তাই ভালবাসার জোছনা....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৮

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৮
 
আরও একটিবারের জন্যে যদি,
তুমি এসে দাড়াতে সামনে,
হাত বাড়াতে আমার পানে,
ডাকতে চোখের ইশারাতে,
তবে এই অমাবস্যার আধারেও,
আমি হেসে উঠতে পারি,
জোছনার রুপোলি উষ্ণতা নিয়ে,
আরও একটিবারের জন্যে যদি,
ভালবাসতে তুমি নতুন করে,
হয়তো আরেকটি তাজমহল কিংবা,
আরও একজন বনলতা সেন,
পৃথিবীর আলোয় আলোকিত হত....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৭

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৭
রোদের আলো ভালো লাগেনা,
জোছনা যেন কেমন,
বৃষ্টি ভীষণ সেকেলে আজ,
মানায়না মোটে এখন,
বিকেলগুলো হচ্ছে মলিন,
ভোরের বড় তাড়া,
সন্ধ্যে হলেই আকাশ ভেঙ্গে,
জাগবে হাজার তারা,
কোথায় গেলে পাওয়া যাবে,
বলনা অভিসার,
কোলাহলের এই জগতে,
নীরবতাই যে সার,
তবু ও আমার ভাবনা চলে,
পাইনা খুঁজে কিছু,
এই ধরনীর সবটাই যে,
ছাড়ছেনা আর পিছু,
তবু ও আশা ঠিক ই দেখিস,
মিলব তোর ই সাথে,
এই পৃথিবীর চোখে ধুলো,
মাখিয়ে অজ্ঞাতে.....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৬

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৬
 
 মাঝে মাঝে ভীষণ কষ্টে,
রাগে ক্ষোভে তীব্র অভিমানে,
নিজেকে মৃত মনে হয়,
কোথায় প্রানের সে স্পন্দন?
কোথায় সে রক্তের উষ্ণতা?
আমি দেখি শীতল চোখে,
হায়েনার কুত্সিত ক্ষুধা জেগে ,
আমি দেখি ধমনী- শিরায়,
নোনা প্রবাহে কৃষ্ণপক্ষের রাত,
আমি দেখি অন্তর আয়নায়,
বিকৃত অট্টহাসির নগ্ন উল্লাস,
আমি দেখি নষ্ট মাটিতে,
বিষাক্ত মৃত্যুর অঙ্কুরিত বীজ,
মাঝে মাঝে ভীষণ কষ্টে,
নিজেকে প্রবোধ দিয়ে যাই,
এখনো এখানে উষ্ণ নিঃশ্বাসে,
মমতার মোমবাতি নিভুনিভু জ্বলে,
এখনো মানুষ নামের মানুষ,
বেছে আছে মরে মরে.....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৫

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৫
 
এখানে তাদের পদচ্ছাপ পাবে,
কিছু মৃতুন্জয়ী মৃতের স্পর্শ,
এইযে এখানে দাগ কেটেছে,
তাইতো আজও এইখানে এখনো,
কিছু দলিত-মোথিত সবুজের ফাঁকে,
উকি দেয় বর্ণিল বুনোফুল,
হেসে উঠে শিশির কনায়,
মলিন রোদের অব্যক্ত অভিমান,
তুমি খুঁজে দেখো একবার,
এখনো এপথে তাদের গন্ধ,
তাদের কথার প্রতিধ্বনি পাবে,
কেন ভাবছো অযথা বন্ধু,
মনুষত্বের সমাধিতে জেগে জেগে,
বিবেক ঘুমিয়ে অবশ আলস্যে,
তুমি হাল ছেড়োনা বন্ধু,
এখনো কাটার সুপ্ত গোড়ায়,
নরম মাটি লেগে আছে...

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৪

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৪
 
জানি একদিন এই আকাশের নিচে,
ঈর্ষায় পুড়িয়ে ওই শেষ বিকেলটিকে,
তুমি মাথা রাখবে আমার বুকে,
তুমি ধরবে এ আমার দুহাত,
সাতজনমের সপ্তগিটের বাধনে,
হেটে যাবে আর বাকিটা পথ,
জানি একদিন এই পথের প্রান্তে,
বুনোফুলের চোখে বিস্ময়বোধক একে,
তুমি দেখবে নতুন দিনের সপণ,
তুমি বুনবে আমার ছোট ঘরখানি,
সহস্র রাতের আধার কেটে কেটে,
তুমি আলোয় ভরে দেবে আমার আকাশ,

জানি একদিন তোমাকে পাশে রেখে,
আমি লিখব জীবনজয়ের উপাখ্যান,
তুমিও কি এমনি করে ভাবছ বল?
অদেখা-অচেনা-অনামিকা, তোমাকেই বলছি....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৩

মুখবইয়ের টুকরো কথন-৩
 
ইচ্ছের গায়ে শেওলা জমেছে,
অভিমানের জলকনায়,
কয়েক বিন্দু শিশির সেথায়,
জলকেলি খেলে যায়,
আর এখানে শব্দের আচলে,
মুখ লুকোচুরি সারাবেলা,
মেঘের খামে হাজার কথায়,
এই দেহখানি সিক্ত,
তবু যখন তুমি বললে,
কেমন আছ তুমি?
মুখে না বলি,বুঝে নিও,
ভালো নেই তুমিহীন....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২

মুখবইয়ের টুকরো কথন-২
চোখহারা পাখি যতই ডাকিস,
চোখ শিয়রে আর ফিরবোনা,
বাকহারা বুকে যতই বাধিস,
তোর বুকে মাথা রাখবোনা,
হাতাছেড়ে তোর যত হাহাকার,
হাতখানি ফের আমি ধরবোনা,
পথভোলা তোর পথের টানে,
পথ আর কভু আঁকবোনা,
যে ঘর তুই ভেঙেছিস হেলায়,
সে ঘর দ্বিধায় বাধবোনা,
যে নোনায় তুই ভাসালি স্বপন,
সেই নোনায় আর কাদবোনা,
মনটা ফেলে গিয়েছিলি তুই,
মনের ধার আর ধারবনা,
না না বলি যত সহজে,
ততখানি আমি পারবোনা,
হাসির আড়ালে কষ্ট হাজার,
তাই বলে কি হাসবনা?
ভালোবাসা তুই বুঝিসনে বলে,
ভালো কি আমি বাসবনা?....

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১

মুখবইয়ের টুকরো কথন-১
দুঃখ গড়ি সুক্ষ হাতে,
রুক্ষ বুকের পাতায়,
সুখের বিম্ব মুখের জালে,
বিমুখ শত কাটায়,
যদিও ভগ্ন তবুও স্বপ্ন,
মগ্ন চোখের ঘুমে,
জীবন নামের দহন কালের,
রোদনখানি চুমে....

একটি কবিতার ফাসি.....

একটি কবিতার ফাসি.....

তাকে কখনই বলিনি কথাগুলো,
বলিনি যে তাকে নিয়েই কবিতাটি লিখেছি,
তার চুল থেকে শুরু করে নখ অব্দি,
প্রতিটি অঙ্গের বন্দনা ছিল তাতে,
তবু একদিন যখন সে কবিতাটি পড়লো,
আচলে মুখটি ঢেকে পালিয়েছিল কোনরকম,
লজ্জায়-ক্ষোভে-নাকি অভিমানে?
জানিনা,জানা হবেনা কখনই আর.

এরপর হাজার উত্সুক জনতার ভীড়ে,
পায়ে পায়ে তার ঘরের ভাঙ্গা দুয়ারে দাড়িয়ে,
আমি বজ্রাহতের মতন ঠায় দাঁড়িয়েছিলেম,
বিশ্বাস কর,আমি না সেখানে দেখিনি,
দেখিনি দড়িতে ঝুলন্ত কোনো নিষ্প্রাণ রমনীর অবয়ব,
যতবার চোখ গিয়েছে সেখানে আমার,
আমি দেখেছি একটি কবিতা ঝুলতে ফাসিতে,
যার সারা গায়ে লেপ্টেছিল লজ্জা,
কামনা-বাসনার ধুলি ধুসর লজ্জা,

ওরা বলে একটি মেয়ের আত্মাহুতির গল্প,
আমি বলি হাজার শব্দের ছন্দময় পথে,
এ ছিল কামনা-বাসনার নির্লজ্জ বলিদান,
এ ছিল একটি কবিতার ফাসি.....

এমনটি করোনা যেন ভুলেও....

এমনটি করোনা যেন ভুলেও....

জানলা খুলে আর কখনো,
চুলটা মেলে দিওনা তুমি,
নেশায় মাতাল হবে সুর্য,
আধার নামবে ঘন আধার,
মেঘে মেঘে ইর্ষা জমে,
ঝড় নেমে আসবে যে,
দোহাই তোমার লক্ষীটি,
এমনটি করোনা যেন ভুলেও.

দরজার চৌকাঠে বসে কখনই,
গুনগুন করে সুর তুলনা,
বাতাসের শীষ থেমে যাবে,
পৃথিবী হয়ে পড়বে নিষ্প্রাণ,
ডানায় ডানায় অভিমান তুলে,
পাখিরা গুমড়ে কাদবে যে,
পায়ে পরি তোমার ওগো,
এমনটি করোনা যেন ভুলেও.

বারান্দার এক-কোণে উদাস হয়ে,
ফেলনা কভু চোখের জল,
সাগরের স্রোত থেমে যাবে,
চরা পড়বে কুলভাঙ্গা নদীতে,
খোলসে খোলসে বেদনা পুরে,
বিলীন হবে ওই মুক্ত-ঝিনুক,
মিনতি করছি সুনয়না,
এমনটি করোনা যেন ভুলেও.

আমাকে ভুল বুঝে কখনই,
দুরে সরে যেওনা যেন,
শুন্যতার ডুবোচর গ্রাস করবে,
আমাকে টেনে নেবে বিমর্ষতা,
শব্দে শব্দে ধুলোর আস্তরণে,
কবিতারা ভুগবে ভালোবাসাহীন,
করজোরে চাইছি সপ্নদেবী,
এমনটি করোনা যেন ভুলেও....

আমার মেয়ে .....

আমার মেয়ে .....

আমার মেয়ে পুতুল খেলে,
পুতুল খেলাই শখ,
রং-বেরঙের বেনীর বাধন,
টুকটুকে লাল নখ,
সাদা পাতা পেলেই হলো,
চলবে আকি-বুকি,
রেখায় রেখায় হাজার জীবন,
নীরব সূর্যমুখী,
আমার মেয়ে গল্প বুনে,
রাজা-উজির-প্রজা,
দৈত্তপুরীর বন্দীনি তার,
রাজকুমারের খোজা,
ঘুমটা এলে ঘুমপাড়ানি,
মাসি-পিসির কোলে,
আমার মেয়ের ছোট্র জগত,
গল্প গানেই দোলে,
আমার চোখে শংকা দ্বিধা,
ভবিষ্যতের টানে,
কি হবে ফের কি হবে না,
কে বা বল জানে,
সমাজ জগত দেশটা জুড়ে,
রুক্ষ শকুন ছায়,
আমার ছোট্র মেয়েটা যদি,
আকাশ ছুঁতে চায়,
আমার মাঝে রাজ্যের মেঘ,
ভয়ের ঘুর্নিঝড়ে,
তবু যখন চোখটা রাখি,
ছোট্র পরীর ঘরে,
কান্না-হাসির সমীকরণ,
আপনমনেই চলে,
আমার মেয়ে উঠুক বেড়ে,
সত্য সবুজ তলে...